Sick-baby

নিরাপদ পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ ও স্বাস্থ্য সেবার অভাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন নিরাপদ পানির অভাবে দিনে ১৪০০ শিশু মারা যায়

ঢাকা: নিরাপদ পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ ও স্বাস্থ্য সেবার অভাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন পাঁচ বছরের কম বয়সী এক হাজার চারশ’ শিশু প্রাণ হারায়। ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবসের একদিন আগে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক বিশেষ সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সারাবিশ্বে নিরাপদ পানীয় পানি সংক্রান্ত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) অর্জনের প্রায় চার বছর পর এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘পানি পাওয়ার সুযোগ একটি মানবাধিকার’ বলে ঘোষণা দেওয়ার পরও ৭৫ কোটিরও বেশি মানুষ এই মৌলিক চাহিদা বঞ্চিত রয়ে গেছে, যাদেরর অধিকাংশই দরিদ্র। ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) যৌথ সমীক্ষা মতে, ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী ৭৬০ কোটি ৮০ লাখ মানুষের নিরাপদ পানি পানের সুযোগ নেই। এ কারণে প্রতি বছর অসুস্থ হয়ে মারা যায় হাজারো শিশু। পানীয় জলের সুবিধা বঞ্চিত বেশিরভাগ মানুষই দরিদ্র এবং দুর্গম গ্রামাঞ্চলে বা বস্তিতে বাস করে।

ইউনিসেফের হিসাব মতে, নিরাপদ পানির অভাব এবং অপ্রতুল পয়ঃনিষ্কাষণ ও স্বাস্থ্য সেবাজনিত পেটের পীড়ায় প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী এক হাজার চার শ’ শিশু প্রাণ হারায়। ইউনিসেফের বিশ্ব পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ ও স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান সঞ্জয় বিজেসেকেরা বলেন, ধনী বা দরিদ্র যাই হোক না কেন, প্রতিটি শিশুরই বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার এবং একটি নিশ্চিত ভবিষ্যতের অধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি পুরুষ, নারী ও শিশু যে পর্যন্ত না পানি এবং পয়ঃনিষ্কাষণের সুযোগ পাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সবাইকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, কারণ এটা তাদের মানবাধিকার। হিসাব মতে, পানীয় পানি সংক্রান্ত এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা ২০১০ সালে অর্জিত এবং স্বীকৃত হয়। এ সময়ের মধ্যে বিশ্বে ৮৯ শতাংশ মানুষ উন্নত পানীয় পানির উৎস থেকে পানি পানের সুযোগ পায়। উৎসগুলো ছিল, পাইপের মাধ্যমে, নলকূপ এবং নিরাপদ কূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ।

২০১০ সালেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নিরাপদ পানীয় পানি এবং পয়ঃনিষ্কাষণ সুবিধাকে একটি মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। এর অর্থ হলো, প্রতিটি মানুষেরই নিরাপদ পানি পান এবং মৌলিক পয়ঃনিষ্কাষণ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে এই মৌলিক অধিকার বিশ্বের দরিদ্রতমদের ক্ষেত্রে অস্বীকার করা হচ্ছে। ইউনিসেফ ও ডব্লিউএইচও’র হিসাব মতে, এমন ১০টি দেশ রয়েছে, যেখানে বিশ্ব-জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল, সেখানে নিরাপদ পানি পানের সুযোগ নেই। দেশগুলো হলো- চীন (১০ কোটি ৮০ লাখ); ভারত (৯ কোটি ৯০ লাখ); নাইজেরিয়া (৬ কোটি ৩০ লাখ); ইথিওপিয়া (৪ কোটি ৩০ লাখ); ইন্দোনেশিয়া (৩ কোটি ৯০ লাখ); কঙ্গো (৩ কোটি ৭০ লাখ); বাংলাদেশ (২ কোটি ৬০ লাখ); তানজানিয়া (২ কোটি ২০ লাখ); কেনিয়া (১ কোটি ৬০ লাখ) এবং পাকিস্তান (১ কোটি ৬০ লাখ)।

ইউনিসেফ’র মতে, নারীরা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হারে নিরাপদ পানির অভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি সপ্তাহে সপ্তাহে নিরাপদ পানি প্রাপ্তির সুবিধাবঞ্চিত ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার লোকের জন্য সহযোগিতা কামনা করে বিশ্বব্যাপী একটি সামাজিক গণপ্রচারাভিযান উদ্বোধন করেছে ইউনিসেফ।

Source By banglanews24.com

Similar Posts